Skip to main content

bangladeshi newspaper online মধু ও জবা ফুল খাওয়ার বিশেষ দশটি উপকারীতা

 🌸জবা ফুল (Hibiscus) ও 🥃মধু (Honey) দুটোই প্রাকৃতিকভাবে ভীষণ উপকারী উপাদান। এই দুটি উপাদানের সম্মিলনে তৈরি হওয়া এক অনন্য মিশ্রণ শরীর ও মনের নানা দিক থেকে উপকারে আসে। জবা ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, অপরদিকে মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক ও শক্তির উৎকৃষ্ট উৎস। এই দুটি একত্রে গ্রহণ করলে তা স্বাস্থ্য রক্ষায় বিস্ময়কর ভূমিকা রাখে। নিচে জবা ফুল ও মধু মিশিয়ে খাওয়ার দশটি উপকারিতার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো, যা ১২০০ শব্দের একটি প্যারাগ্রাফ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

bangladeshi newspaper online মধু ও জবা ফুল খাওয়ার বিশেষ দশটি উপকারীতা

জবা ফুল ও মধু একত্রে খাওয়া হলে প্রথমত এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। জবা ফুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে, যার ফলে দেহের কোষগুলো সুস্থ থাকে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হয়। মধু নিজেও প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত, এই মিশ্রণ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, জবা ফুলের নির্যাস রক্তনালীগুলোর প্রসারণ ঘটিয়ে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে। যারা নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য এটি একটি নিরাপদ প্রাকৃতিক বিকল্প। তৃতীয়ত, এটি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। জবা ফুলে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েডস রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। মধু রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে, ফলে এই মিশ্রণ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

চতুর্থত, এই মিশ্রণ হজমশক্তি উন্নত করে। জবা ফুল হজমের রস নিঃসরণে সহায়তা করে এবং বদহজম, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি সমস্যা কমায়। মধু প্রাকৃতিকভাবে পাচনতন্ত্রকে মসৃণ করে, যা পেটের গ্যাস ও অম্লতা দূর করে দেয়। পঞ্চমত, এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। জবা ফুল মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। মধু চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টির চেয়ে অনেক স্বাস্থ্যকর, তাই চা বা পানীয়তে এটি ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ এড়ানো যায়। নিয়মিত জবা ফুল ও মধু মিশিয়ে খেলে ক্ষুধার পরিমাণও নিয়ন্ত্রিত থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

ষষ্ঠত, এই মিশ্রণ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। জবা ফুলে থাকা প্রাকৃতিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ ঝরিয়ে দিয়ে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। মধু ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে, ব্রণ ও ফুসকুড়ি প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে কোমল ও মসৃণ রাখে। নিয়মিত এই মিশ্রণ খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকে প্রয়োগ করলেও উপকার মেলে। সপ্তমত, এটি চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। জবা ফুল প্রাচীনকাল থেকেই চুল পড়া রোধ, খুশকি দূর এবং চুলের গ্রোথ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধু চুলে পুষ্টি জোগায় ও চুলের শুষ্কতা দূর করে। এই দুটি একত্রে খেলে চুল ভিতর থেকে মজবুত ও ঝলমলে হয়।

অষ্টমত, এই মিশ্রণ মানসিক চাপ কমাতে দারুণ কার্যকর। জবা ফুলে রয়েছে প্রাকৃতিক ‘অ্যাডাপ্টোজেনিক’ উপাদান, যা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে। মধুতে থাকা গ্লুকোজ মস্তিষ্কে পৌঁছে মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত মানসিক চাপে থাকেন বা নিদ্রাহীনতায় ভোগেন, তাদের জন্য এই মিশ্রণ অত্যন্ত উপকারী। নবমত, এটি পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। জবা ফুল প্রাকৃতিকভাবে মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ঋতুকালীন পেটব্যথা বা অস্বস্তি কমায়। মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে তা আরও দ্রুত আরাম এনে দেয় এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

দশমত, এই মিশ্রণ ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, জবা ফুলে থাকা পলিফেনল জাতীয় উপাদান ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধে সহায়তা করতে পারে। মধুতে থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভোনয়েডস ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। যদিও এটি চিকিৎসার বিকল্প নয়, তবে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এই মিশ্রণ অন্তর্ভুক্ত করা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

সবচেয়ে ভালো ফল পেতে চাইলে সকালে খালি পেটে গরম পানি বা লেবুর পানিতে এক চা চামচ জবা ফুলের গুঁড়ো ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের মধু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া জবা ফুল সবসময় রাসায়নিকমুক্ত ও পরিষ্কার হওয়া জরুরি। অনেক সময় রাস্তার ধারে বা রাসায়নিক দিয়ে চাষ করা ফুল শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সবসময় নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে জবা ফুল সংগ্রহ করে ব্যবহার করাই উত্তম।


সারসংক্ষেপে বলা যায়, জবা ফুল ও মধুর মিশ্রণ শরীরের ভেতর ও বাইরে—উভয় দিক থেকেই সুস্থতা এনে দেয়। এটি একদিকে যেমন হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হজমের সমস্যা, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, তেমনি ত্বক ও চুলের যত্ন, মানসিক চাপ কমানো ও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের রুটিনে এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদানের সংযোজন স্বাস্থ্যের জন্য একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত হতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

Latest news of bangladesh

 Latest news of bangladesh: বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিচারিক পরিবর্তন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশেষ ত্রাইব্যুনাল ডেপোসড প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনাকে “অ্যাপসনেরিয়া”-এর দায়ে অপরাধের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে চার্জ তোলে, এতে ২০১৪–১৫ সালের বিক্ষোভ দমনে পুলিশের সহিংসতা ও জনহানির ঘটনা অন্তর্ভুক্ত । আন্তর্জাতিক ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল (ICT-BD) তাকে, তার সেটের হোম মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে এবং পাঁচিলঢাল পুলিশ আইজি আল মামুনসহ, ছয়টি মামলা চালাচ্ছে, যার চার্জফ্রেমিং সম্পন্ন; বিচারের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে আগস্ট ৩–৪, ২০২৫ । আদালত গোপন অডিও রেকর্ডিং ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ চাপিয়ে বলছে যে, হাসিনার সরকার রৈভেদী প্রতিবাদ দমন করতে নৃশংস ধরপাকড় চালিয়েছিল । এ ঘটনায় আইপি গুলি চালায়, গ্রেফতার, নির্যাতন ও দ্রুতবিধ্বংসী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ন্যায্য বিচার বঞ্চনা করা হয়েছে বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। এই মামলায় উল্লেখযোগ্য হলো, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ছিলাম তৎকালীন পুলিশ প্রধান, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন এবং প্রোসিকিউশন যুক্তিতে সাক্ষী দেন । এ ঘটনা ...

কৃষি কার্ড অনলাইন করার নিয়ম

  কৃষি কার্ড অনলাইন করার নিয়ম সহজ উপায়: কৃষি কার্ড হলো কৃষকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় ও সেবা গ্রহণের মাধ্যম, যার মাধ্যমে তারা সরকারি বিভিন্ন কৃষি উপকরণ, ভর্তুকি, প্রশিক্ষণ ও ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের তথ্যভিত্তিক সমর্থন দিতে এবং তাদেরকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করতে “কৃষি কার্ড অনলাইন” একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে কৃষি কার্ড ডিজিটালকরণ বা অনলাইনে নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকের পরিচয়, জমির পরিমাণ, ফসল উৎপাদনের ধরন ও কৃষি উপকরণের প্রয়োজনীয়তা ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। কৃষি কার্ড অনলাইনে করার মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের সহজে, স্বচ্ছ ও দ্রুত সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। একসময় এই কার্ড সরাসরি হাতে লেখা ফর্ম পূরণ করে তৈরি হতো এবং তা সংগ্রহ করতে কৃষকদের ইউনিয়ন অফিস, কৃষি অফিস কিংবা উপজেলা অফিসে বারবার যেতে হতো। এতে সময় ও অর্থ ব্যয় হতো, আবার অনেক সময় সঠিক তথ্য না থাকায় কৃষকরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন। বর্তমানে অনলাইন প্রক্রিয়ার ফলে একজন কৃষক নিজেই অথব...

online news portal bangladesh

 online news portal bangladesh: বর্তমানে বাংলাদেশের আকাশ আંধারের আবহাওয়া বিরাজ করছে, এখানে আর্দ্রতা অনেক বেশি ও তাপমাত্রা প্রায় ৩৩°C এর কাছাকাছি, সাথে বৃষ্টির সঙ্গে আংশিক মেঘলা পরিবেশ চলছে । এই ধরণের পরিস্থিতি তাপ বাড়ায় এবং বায়ুতে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প ধরে রাখে, যা বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি, বন্যা, ভূমিকম্প এবং সাইক্লোনের প্রবণতা বাড়ায়। জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের ভৌগোলিক এবং সামাজিক কাঠামোতে গভীর প্রভাব ফেলছে। নিচে সেটির মূল দিকগুলো তুলে ধরা হলো: --- ১. তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও চরম তাপপ্রবাহ গত কয়েক বছর ধরে উত্তরের অংশে তাপমাত্রা ৪৩.৮ °C-তে পৌঁছেছে, যা ১৯৪৮ সাল থেকে রেকর্ডকৃত তাপমাত্রার চেয়ে ১৬ °C বেশি । এ ধরনের তীব্র তাপের কারণে স্কুল বন্ধ, শিশুদের স্বাস্থ্যহানি, কৃষি চাষে ব্যাঘাত, গুণগতমানের খাদ্য উৎপাদনে বিঘ্ন এবং শহরে ‘Urban Heat Island’ তৈরি হচ্ছে। তাপপ্রবাহ থেকে উদ্ভূত স্বাস্থ্যজটিলতাগুলোর মধ্যে রয়েছে হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন, নেত্রজোড়ার সমস্যা, গরিব ও বৃদ্ধ মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, এবং চাকরিহীনতা বৃদ্ধি। ২. বন্যা ও অস্থায়ী খরা (Erratic Rainfall) মুনসুন মৌসুমে ভা...