bangladeshi bangla newspaper

 সরকারি চাকুরিজীবী ও পেনশনভোগীদের আর্থিক নিরাপত্তা ও ভোগান্তি হ্রাসে বাংলাদেশের সরকার ২০২৫‑২৬ অর্থবছরের বাজেটে উল্লেখযোগ্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে। এই বিশেষ সুবিধা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর এবং মূল বেতন বা পেনশনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হারে প্রদেয় হবে—যাতে ন্যূনতম টাকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত প্রায় তিন লাখের বেশি ব্যক্তি সরাসরি উপকৃত হবেন।

🏛️ সুবিধার কাঠামো ও শতাংশ

১. বেতনগ্রেড ভিত্তিক সুবিধা

গ্রেড ১–৯: চলতি নিয়োগে থাকা সরকারি‑বেসামরিক, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিজিবি, পুলিশ ইত্যাদি খাতে কর্মরতরা প্রত্যেকে তাদের মূল বেতনের উপর ১০% ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন ।

গ্রেড ১০–২০: একই খাতের কর্মীরা পাবেন ১৫% উপার্জনের বেশি হিসেবে ।

২. ন্যূনতম পরিমাণ নিশ্চিতকরণ

চাকরিরতদের জন্য ন্যূনতম ১,০০০ টাকা এবং

পেনশনভোগীদের জন্য ন্যূনতম ৫০০ টাকা ।

৩. পুনর্মূল্যায়ন ও পুনঃবন্টন

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫‑২৬ অর্থবছরের বাজেটে পূর্বের আলোচিত পরিমাণ বৃদ্ধি করে ঘোষণা দেন—চাকরিরতদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সুবিধা ১,৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৭৫০ টাকা করার প্রস্তাব নেয়া হয় । পরবর্তীতে সরকারি প্রজ্ঞাপনে তা বাস্তবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার ফলে ন্যূনতম সুবিধার পরিমাণ আপডেট হয়ে যায়।

👵 পেনশনভোগীরা কেমন সুবিধা পাচ্ছেন?

যারা মাসিক পেনশন ≥ ১৭,৩৮৯ টাকা, তারা পাবেন ১০% পর্যন্ত ‘বিশেষ সুবিধা’ ।

যাদের মাসিক পেনশন ১৭,৩৮৯ টাকার নীচে, তাদের জন্য সুবিধা হবে ১৫% হিসেব ।

বিশেষভাবে, যারা পূর্ণ পেনশন এককালীন উত্তোলন করেছেন এবং এখনও পুনঃস্থাপন হয় নি, তারা এই সুবিধার আওতায় পড়বে না ।

📅 সুবিধার কার্যকর সময় ও পুনরাবৃত্তি

সুবিধাটি প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে প্রযোজ্য হবে, অর্থাৎ এটি একটি বার্ষিক পুনঃমূল্যায়নযোগ্য অগ্রিম সুবিধা ।

যারা বর্তমানে PRL (Post-Retirement Leave) এ রয়েছেন, তাদেরও সুবিধা দেওয়া হবে তাঁদের সর্বশেষ মূল বেতনের ভিত্তিতে ।

স্থায়ী বা অস্থায়ী বরখাস্ত প্রাপ্ত কর্মী-দের জন্য সুবিধা তাদের বরখাস্তের পূর্বের মূল বেতনের ৫০% এর ওপর নির্ভর করবে ।

যারা বিনা বেতনের ছুটিতে (leave without pay) আছেন, তাদের এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না ।

🏛️ চুক্তিভিত্তিক ও স্বায়ত্তশাসিত খাত


চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরাও যদি জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত গ্রেডে থাকেন, তারা সুবিধা পাবেন।

পেনশনভোগী চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা পেনশন বা বেতনের যেটি বেশি, তার ভিত্তিতে সুবিধা পাবেন ।

তবে যারা রাজস্ব বাজেট বহনকারী নয়—যেমন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ইত্যাদি—তাদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান নিজেই এই প্রণোদনার টাকা বহন করবে ।

💰 বাজেট ও আর্থিক বৈশিষ্ট্যসমূহ

২০২৫‑২৬ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হয়েছে, যাতে এই সুবিধা বণ্টন সহজ এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই হয় ।

চাকরিজীবী ও পেনশনভোগীদের জন্য সর্বমোট বরাদ্দ: ৯১,২৯৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে ।

🎯 উদ্দেশ্য ও প্রভাব

১. জীবনমান ও আর্থিক নিরাপত্তা

মূল বেতন ও পেনশনের ওপর সরাসরি শতাংশ হিসেবে প্রণোদনা দিয়ে আর্থিক সুরক্ষা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জীবনে অবিলম্বে প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের কর্মীদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

২. অর্থনৈতিক উদ্দীপনামূলক উদ্যোগ

চাকরিজীবীদের নিট আয় বৃদ্ধি পেলে তাদের ব্যয়ক্ষমতা বাড়বে—যা অভ্যন্তরীণ বাজার ও অর্থনীতিকে টোকায় টোকা চালিত করবে।

৩. অবসরোত্তর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ

পেনশনভোগীদের জন্য নির্দিষ্ট শতাংশ ও ন্যূনতম টাকা নিশ্চিত করে প্রদানে, প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনের অবশিষ্ট সময়ে আর্থিক চাপ কিছুটা নেমে আসবে।

৪. প্রতিষ্ঠানভিত্তিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা

স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব বাজেট থেকে ব্যয় বহন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে—যাতে এগুলো রাষ্ট্রিNয়ের অগ্রাধিকার নয় বরং প্রতিষ্ঠানভিত্তিক দায়িত্বজনিত অবস্থায় স্থিতিশীল থাকবে।

📝 সীমাবদ্ধতা ও বিবেচ্য বিষয়সমূহ

যারা পূর্ণ পেনশন এককালীন নেন এবং পুনঃস্থাপন প্রক্রিয়াধীন, তারা সুবিধা থেকে বঞ্চিত — এটি তাদের নিরাপত্তা কাঠামোর সম্পূর্ণ নয়।

বিনা বেতনে ছুটি নেওয়া কর্মীরা সুবিধা থেকে বাদ পড়ছে—যদিও তাদের আর্থিক দায়বদ্ধতা কমে না।

সুবিধাটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের আওতায় থাকলেও, স্থানীয় পর্যায়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে, বিশেষ করে institutional অ-রাজস্ব বাজেট সিস্টেমে।

🔍 সারাংশ ও সমাপ্তি

২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সরকার সরকারি চাকরিজীবী ও পেনশনভোগীদের জন্য এক ‘বিশেষ সুবিধা’ চালু করেছে, যা মূল বেতন বা পেনশনের উপর নির্দিষ্ট শতাংশ ও ন্যূনতম টাকা হিসেবে প্রণোদনা দেয়—গ্রেড ১–৯ কর্মীরা পাবেন ১০%, গ্রেড ১০–২০ কর্মীরা ১৫%, এবং পেনশনভোগীরা একই ধরণের কাঠামো অনুসরণ করবে। ন্যূনতম নির্ধারিত টাকার পরিমাণ চাকরিজীবীদের জন্য ১ ৫০০ টাকা, পেনশনভোগীদের জন্য ৭৫০ টাকা। এ সুবিধা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে, যা কার্যকর হবে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে।

এই প্রণোদনা কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি জনসাধারণের আয়‑বৃদ্ধি ও আর্থিক সুরক্ষা বৃদ্ধি করবে। নির্দিষ্ট ধরনের কর্মী যেমন বরখাস্ত, ছুটিতে আপাতত বিনা বেতনে থাকা বা এককালীন পেনশন নেয়া গেলেও কিছু ব্যক্তি সুবিধা পাচ্ছেন না—তবে সামগ্রিক দিক থেকে এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদারকরা পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم